তবু ও ভাবতে হয়
-সত্যদেব পতি
শৈশব থেকে কৈশোর আত্মীয় অনাত্মীয়ের গুরু গম্ভীর অদৃশ্য বেড়াজালে ছিল জীবন,
আপন সীমানা অতিক্রম হলো সেই কলেজে-
নিঃশব্দ ছিল না সময়।
মনের আকাশ গঙ্গায় সবেমাত্র জোয়ারের জল,
ভালোবাসা কখন এসে বাসা বাঁধে,
সেকথা বোঝার আগেই লীন হয় মন-
সকালের সূর্য্যালোকের মতো ঝলমলে মন
কতো রঙিন স্বপ্ন মাখা দিন ছিল যৌবনে।
তোমার আগমনী বুঝতে না পারলেও অনুভবে ছিল তোমার নতুন গন্ধ,
সবকিছুই ছিল রঙিন উচ্ছাসে বিহ্বল-
কলেজ ক্যাম্পাসের উদ্দ্যানে কতো ফুলের সমাহার সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ছিল আমাদের।
তোমার কাজলকালো চোখ, আষাঢ়ি মেঘ চুলের ঘনঘটা আমি একান্তে মুগ্ধ হোতাম-
হঠাৎ এক শরৎ বেলায় হলো পরিচয়,
বন্ধু হলাম দুজনে….
সেই বন্ধুত্ব কখন প্রেম হয়েছিল তা বুঝিনি।
বেশ তো ছিলাম তবে কেন বাড়লো ব্যকুলতা?
একদিন অদর্শনে নেমে আসতো শ্রাবণী বর্ষা,
মুষলাধারে হতো বরিষণ অবিরাম…
সবকিছুই যেমন শুরু হয় ঠিক তেমনই আছে সমাপন, সেদিন ভাঙলো ধৈর্য্য ভরা বাঁধ।
ভাদুরে বানের মতো সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেল
তোমার আমার মাঝখান দিয়ে…
আমাদের সাজানো বাগানে অঝোরে শ্রাবণ এলো লহমায়!
তোমার আমার মাঝখানে সৃষ্টি হলো বৈষম্য নদী।
আজ তুমি দূর আকাশের চাঁদ,
তোমার পরশ আজ আমায় হরষিত করেনা-
তোমার চাঁদনী রাত আমার জন্য আলো দেয় না..
তোমার আকাশে আজ নবীন সূর্য্য!
আমার ভালো বাসার প্রাসাদে তবু ও তোমার সিংহাসন পাতা শুধু তোমার জন্য,
কারণ সেখানে আমি আর কাউকে দেখতে পারবো না বলে।
স্মৃতির পরতে তোমার লেখা চিঠি গুলো
আকাশের গায়ে ভাসমান মেঘের ভাঁজে রাখা,
আমার দেখা স্বপ্ন গুলো সময়ের দর্পনে বন্দি!
আজো মনে হয় তুমি ফিরবে এখানে,
সেই জন্য আমি আজও একান্তে ভাবি তোমার কথা আমাদের কথা ভুলে যাওয়া যায় না…
সেই জন্য আমাকেই ভাবতে হয়।